শারীরিক দুর্বলতা দূর করার সহজ পদ্ধতি
শারীরিক দুর্বলতা দূর করার সহজ পদ্ধতি নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব।বর্তমানে অনেক
মানুষের নিত্যদিনের একটি সমস্যা হচ্ছে শারীরিক দুর্বলতা। অস্বাস্থ্যকর খাবার, রোগ
ব্যাধি, পুষ্টির অভাব, পানি শূন্যতা সহ কারণে শারীরিক দুর্বলতা হয়ে থাকে।
শারীরিক দুর্বলতার কারণে কোন কাজ করতে গেলে শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়। এই শারীরিক
দুর্বলতা দূর করতে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে এবং
নিয়মিত হালকা পরিমাণে ব্যায়াম করতে হবে। বেশি পরিমাণে শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে
ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
আমরা সাধারণত দুর্বলতা বলতে বুঝি যে, শরীরের কোন মাংসপেশির কার্যক্ষমতা হ্রাস
পাওয়া। এই শারীরিক দুর্বলতার কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। যেমন: মাথা
ঘুরে, শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, খিদে কমে যায় মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। এই শারীরিক
দুর্বলতা দূর করার সহজ পদ্ধতি হলো পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া ,পুষ্টি সমৃদ্ধ
খাবার খাওয়া, নিয়মিত ঘুমানো ও ব্যায়াম করা।
ভূমিকা
বর্তমানে আমাদের জীবন সারাদিন রাত কাজ কর্মের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে। এই কাজের
ফলে অনেকে অবসাদগ্রস্ত এবং ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু স্বাভাবিকের তুলনায় কোন
ছোটখাটো কাজ করেও যদি অধিক পরিমাণে অসস্তিবোধ হয় শরীরে তখন তা শারীরিক
দুর্বলতা বলে গণ্য হয়।শারীরিক দুর্বলতা একটি অস্বস্তিকর বিষয়। সঠিক খাদ্য
গ্রহণ না করা এবং অলস ভাবে জীবন যাপনের কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। সাধারণত
অস্বাস্থ্যকর ডায়েট, অ্যানিমিয়া ও আয়রনের ঘাটতি, থাইরয়েডের সমস্যা, ঘুমের
অভাব, এবং রক্তে চিনির পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে মানুষ খুব তাড়াতাড়ি দুর্বল
হয়ে পড়ে। শরীর দুর্বল হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম গ্রহণ এবং ঘুমাতে হবে।
সঠিক এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। নিয়ম তান্ত্রিকভাবে জীবন যাপন করলে
শারীরিক দুর্বলতা কমে গিয়ে শরীর ও মন উৎফুল্ল থাকবে।
শারীরিক দুর্বলতা কি?
শারীরিক দুর্বলতা বলতে আমরা বুঝি সাধারণত শরীরের কোন মাংসপেশির কার্যক্ষমতা
স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যাওয়া। এজন্য শারীরিক দুর্বলতা হলে মানুষের কাজের প্রতি
অনীহা সৃষ্টি হয়। সাধারণত মানুষ যখন অসুস্থ হয় তখন সে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে
যায়। এই শারীরিক দুর্বলতাকে অবহেলা করলে চলবে না। কারণ, শারীরিক দুর্বলতা
পরবর্তীতে কোন বড় ধরনের রোগ নিয়ে আসতে পারে। এজন্য আমাদের সব সময় সতর্কতা
অবলম্বন করা উচিত।
আরো পড়ুন: চুল পড়া এবং খুশকি কমানোর সঠিক উপায়।
ক্লান্তি এবং শারীরিক দুর্বলতা দুটি ভিন্ন জিনিস। সাধারণত কাজ করার ফলে শরীর
ক্লান্ত হবে এটি স্বাভাবিক। কিন্তু পর্যাপ্ত ঘুম না হলে, সঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া
না করলে অথবা দীর্ঘদিন কোন অসুখে ভুগলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। ক্লান্তি
কিছু সময়ের জন্য হয় এবং এটি একটি সাময়িক বিষয়। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে
ক্লান্তি দূর হয়ে যেতে পারে কিন্তু শারীরিক দুর্বলতা যার মাঝে আছে তারা বিশ্রাম
নিলেও সহজে শারীরিক দুর্বলতা কমবে না। এজন্য শারীরিক দুর্বলতা কমার ক্ষেত্রে
চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
শারীরিক দুর্বলতা কেন হয়?
শারীরিক দুর্বলতা একটি বিরক্তিকর সমস্যা। শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে গেলে কোন কাজের
প্রতি মন বসে না এবং কাজ করতে অস্বস্তি বোধ হয়। বিভিন্ন কারণে শারীরিক দুর্বলতা
হয়ে থাকে। শারীরিক দুর্বলতা হওয়ার কারণগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।
- ঘুম কম হওয়া: সারাদিন কাজকর্ম ও ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটিয়ে রাতে যদি ঠিকঠাক ভাবে ঘুমাতে না পারা যায়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য সময় মত ও পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়।
- বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি: বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধির কারণেও শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। যেমন: অ্যাংজাইটি, অ্যানিমিয়া, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড সহ আরব বিভিন্ন অসুখের কারণে ঘুমিয়ে থেকে উঠার পরও ক্লান্ত লাগতে পারে। এজন্য শারীরিক দুর্বলতার অন্যতম একটি কারণ হলো বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে থাকা।
- অলস জীবন যাপন: কোন কাজ করবো না করে সারাদিন শুয়ে বসে থাকলে শরীরে ঝিমঝিম ভাব চলে আসে। এর ফলশ্রুতিতে কোন কাজে মন বসে না এবং কাজের প্রতি অনীহা চলে আসে। এভাবে চলতে থাকলে শরীরের কার্যক্ষমতার পাবে এবং শারীরিক দুর্বলতা সৃষ্টি হবে।
- পানি শূন্যতা: সাধারণত স্বাভাবিকের তুলনায় কম পানি পান করলে শরীরে পানির অভাব দেখা দেয়। এই প্রয়োজন মাফিক পানি পান না করলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে সঠিকভাবে ঘুম আসে না। এবং শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এজন্য পানি শূন্যতার অভাবেও শারীরিক দুর্বলতা হতে পারে।
- অস্বাস্থ্যকর ডায়েট: সঠিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার না খেলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে এবং শরীর দুর্বল হয়ে যায়। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত ও কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খেলে শরীরের মেদ বৃদ্ধি পায় এবং কাজ করতে অলসতা আসে। অল্প কাজ করলেই হাপিয়ে ও ক্লান্ত হয়ে যায়। এজন্য এ সকল অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করলে শারীরিকভাবে দুর্বলতা সৃষ্টি হয়।
- শরীর চর্চা না করা: যারা নিয়মিত ব্যায়াম করে না অলস হয়ে পড়ে থাকে বিছানায় তাদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে শরীর ও মন উৎফুল্ল হয় না। ফলে যে কোন কাজ করতে গেলে ক্লান্তি ও অবসাদ চলে আসে। এজন্য নিয়মিত শরীর চর্চা না করলে শারীরিক দুর্বলতার শিকার হতে পারেন।
- ব্লাড সুগার বৃদ্ধি: অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায়। এর ফলে ডায়াবেটিসের মতো বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। এবং ব্লাড সুগার ও রক্তের শর্করার পরিমাণ কম বেশি হওয়ার কারণে অনেক সময় মানুষ কাজ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যায়। এর ফলে শারীরিক দুর্বলতার সৃষ্টি হয়।
- লৌহের ঘাটতি: শরীর ক্লান্ত হওয়ার এবং শারীরিক দুর্বলতার একটি কারণ হলো লৌহের ঘাটতি বা স্বল্পতা। লৌহের ঘাটতি থাকলে সারাদিন ঘুমালেও ক্লান্তি দূর করা সম্ভব হবে না। সাধারণত গর্ভবতী মহিলা এবং পিরিয়ড চলাকালীন নারীদের মাঝে লৌহের ঘাটতি বেশি দেখা দেয়। এজন্য শরীরে লৌহের ঘাটতির কারণে শারীরিক দুর্বলতা ও ক্লান্তি দেখা দেয়।
- গরম ও অসুস্থতা: বেশিক্ষণ যাবত রোদে বা উষ্ণ পরিবেশে থাকার কারণে শরীরের ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয়। অতিরিক্ত গরমের কারণে ঘুম ঘুম ভাব হয়, কর্মশক্তি হ্রাস পায় এবং শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে শারীরিক দুর্বলতা সৃষ্টি হয়।
- ডায়রিয়া: ডায়রিয়া হওয়ার কারণে শারীরিক দুর্বলতা সৃষ্টি হতে পারে। ঘনঘন পাতলা পায়খানা হলে শরীরের সকল খাদ্যবস্তু শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এর ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।
- লিভার রোগ: অতিরিক্ত মদ পান এবং জন্ডিস হলে লিভারে রোগের সৃষ্টি হয়। লিভারের রোগ হলে চিন্তাশক্তি কমে যায়, রক্তযুক্ত বমি হয় এবং অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে শরীর। তাছাড়াও পা ও পেট ফুলে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে শারীরিক দুর্বলতা বৃদ্ধি পায়।
- কিডনি রোগ: কিডনির বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি হলে, কিডনি থেকে বিষাক্ত এবং বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে মল মূত্রের মাধ্যমে বের হতে পারে না। এমত অবস্থায় শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।
- হতাশা ও বিষন্নতা: অনেক সময় কোন কিছু নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করার ফলে মানসিক চাপে সৃষ্টি হয়। এবং এই মানসিক চাপের ফলে দুর্বলতা ও ক্লান্তি শরীরে বিরাজমান হয়। এজন্য হতাশা ও বিষণ্নতা হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।
শারীরিক দুর্বলতা দূর করার সহজ পদ্ধতি
সব সময় শরীরের দুর্বলতার জন্য ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা
মূলক নিয়ম নেই। শারীরিক দুর্বলতা কাটানোর ক্ষেত্রে ভিটামিন সি অনেক
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন টক জাতীয় ফল, যেমন: কমলালেবু, আঙুর এ
সকল ফল ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি, এবং
ফলমূল ও প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন: দুধ, ডিম, কাজুবাদাম ও কলা, এই ধরনের খাদ্য
উপাদান গ্রহণ করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
এলার্জি সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়।
আপনি চাইলে নিজের সচেতন হয়ে নিজের শরীরের দুর্বলতা দূর করতে পারবেন। আসুন আমরা
শারীরিক দুর্বলতা দূর করার সহজ পদ্ধতি সমূহ জেনে নিই ।
- অনেক সময় পর্যাপ্ত পানি পান করার অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য শারীরিক দুর্বলতা দূর করার সহজ পদ্ধতি হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা।
- প্রতিদিন সকালবেলায় নিয়মিতভাবে শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করতে হবে।
- প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ এবং সিদ্ধ ডিম খেতে হবে।
- নিয়মিত পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
- শরীর অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে পড়লে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে।
- রাতে নিয়মমাফিক সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।
- অবসাদ ও বিষণ্নতা দূর করে সব সময় হাসিখুশি এবং উৎফুল্ল মনে থাকতে হবে।
- শরীর স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি দুর্বল অনুভব হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
শারীরিক দুর্বলতা কমানোর জন্য কি খাওয়া উচিত?
শারীরিক দুর্বলতা কমানোর জন্য সঠিক ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। প্রোটিন
সমৃদ্ধ খাবার , যেমন: ছোলা, মটরশুটি, মাশরুম, বাদাম, চিয়া সিড এ ধরনের খাদ্য
গ্রহণ করা উচিত। তাছাড়া মাংস দিয়ে সুপ তৈরি করে খাওয়ার মাধ্যমে শারীরিক
দুর্বলতা অনেকাংশ কমে যায়। বিভিন্ন ধরনের ফল, যেমন: আপেল, কমলা, মালটা,
পেয়ারা, পেঁপে, আনারস, আঙ্গুর, ডালিম, লেবু, ডাব ইত্যাদি ফল নিয়মিত খলে
শারীরিক দুর্বলতা কমে যাবে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজি, যেমন:
মিষ্টি কুমড়া, আলু, গাজর, কচু শাক, পালং শাক ইত্যাদি এ সকল খাদ্য শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর করে দেয়।এছাড়াও
শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান আছে সেগুলো নিচে
আলোচনা করা হলো।
- ভিটামিন সি যুক্ত খাবার: শরীরের দুর্বলতা কাটাতে ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ভিটামিন সি এর অভাব থাকলে বিভিন্ন টক জাতীয় ফল খাওয়া যেতে পারে। সাধারণত লেবু, কমলা, আঙ্গুর, পালং শাক, লেটুস পাতা ও মরিচ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার। এ সকল খাবার খেলে শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে সক্ষম হওয়া যাবে।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: প্রোটিন যুক্ত খাবার শরীরের দুর্বলতা কমানোর জন্য অনেক বেশি কার্যকরী হিসেবে বিবেচিত। ডিম, দুধ প্রোটিনের ভালো এবং অন্যতম উৎস। এ সকল প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে দেহের কোষ সুস্থ থাকে। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলশ্রুতিতে শারীরিক দুর্বলতা হ্রাস পায়।
- আয়রন জাতীয় খাবার: সাধারণত যে সকল খাবার দেহে আইরন বা লোভের পরিমাণ বৃদ্ধি করে সে সকল খাবার খেলে শারীরিক দুর্বলতা অনেকাংশে কমে যায়। সবুজ শাকসবজি, মটর, ডাল, শুকনো ফল এবং ডার্ক চকলেট আয়রনের ভালো উৎস। এই জাতীয় খাবার খেলে শারীরিক দুর্বলতা কেটে যায়।
- মধু সেবন: শরীরের দুর্বলতা এবং মানসিক চাপ কমাতে একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান হচ্ছে মধু। মধুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, লৌহ, সিলিকন ফসফরাস এবং ভিটামিন বিদ্যমান রয়েছে। মধু ভিটামিন বি এর উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে। মধুর সেবন করলে শারীরিক দুর্বলতা ধীরে ধীরে কমে যায়।
- চিয়া সিড: শরীরের শক্তি যোগানোর ক্ষেত্রে চিয়াসির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। চিয়া সিডে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । চিয়া সিট ভিজিয়ে রাখলে পরবর্তীতে তা আকারে অনেক গুণ বড় হয়ে যায়। এটি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা অবস্থায় থাকে। এবং কাজ করার এনার্জি পাওয়া যায়। এজন্য শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে চিয়া সিড একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
- ডার্ক চকলেট: কোকুয়া বা ডার্ক চকলেট ব্যাকটেরিয়া রোধ করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, এবং ভিটামিন সি। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন ডি, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, কপার ও সেলিনিয়াম। এগুলো বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণ দূর করতে কার্যকরী হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি একটি পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার। প্রতিনিয়ত দু-এক টুকরা ডাব চকলেট খেলে শরীরের সকল দুর্বলতা ধীরে ধীরে কমে কমে যাবে।
- আদা ও লেবুর রস: মানসিক ক্লান্তি ও অবসাদগ্রস্থ তা দূর করার জন্য আদা ও লেবুর রস মিশিয়ে সকালে খালি পেটে পান করলে শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়ে যায়। আদাতে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। এজন্য শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য আগাছা বা লেবুর রস খুবই উপকারী
- সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক মাছ অত্যন্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি খাবার। কারণ সামুদ্রিক মাছের তেল মানসিক চাপ কমাতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে এবং হরমোন খরনের মাত্রারাও ঠিক রাখে। তাছাড়া সামুদ্রিক মাছ খেলে হজম ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। এর জন্য সামুদ্রিক মাছ শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে ব্যাপকভাবে কার্যকরী হিসেবে গণ্য করা হয়।
- দুধ পান: শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান হলো দুধ। দুধ আমাদের শরীরের সকল দুর্বলতা খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে। অতিরিক্ত শারীরিক দুর্বলতা লাগলে এক গ্লাস দুধের সাথে দুই চামচ চিনি মিশিয়ে খেলে সুফল পাওয়া যায়। তাছাড়া দুধের মধ্যে দুই তিনটি ডুমুরের ফল দিয়ে সিদ্ধ করে সেই দুধ খেলে দেহের বিভিন্ন দুর্বলতা অনেক অংশে কমে যায়। দুধে বিদ্যমান থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়ের গঠনকে মজবুত করে এবং আমাদের দুর্বলতা দূর করে।
- কাজুবাদাম খাওয়া: কাঠবাদাম এবং কাজুবাদাম দেহের জন্য। এ সকল খাদ্যবস্তু দেহের ওজন বাড়ায় না বরং উচ্চমাত্রায় প্রোটিন এবং আঁশযুক্ত খাবার হিসেবে গণ্য। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। এ সকল উপাদান থাকার কারণে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করে দেয়। এজন্যে শরীর দুর্বল হলে নিয়মিত কিসমিস কাজুবাদাম এসব খেতে হবে।
- কলা: কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম বিদ্যমান। একটি কলা খেলে সাধারন তো এক ঘন্টা কাজ করার মত এনার্জি পাওয়া যায়। কলাতে বিদ্যমান রয়েছে ভিটামিন বি, সি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট। এ সকল উপাদান থাকার কারণে কলা একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার। প্রতিদিন একটি করে কলা খেলে শরীরের ক্লান্তি দূর হবে এবং শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
লেখক এর মন্তব্য
শারীরিক দুর্বলতা অনেকের জন্যই একটি কষ্টকর সমস্যা। আজকে আমরা শারীরিক
দুর্বলতা দূর করার সহজ পদ্ধতি সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। আলোচনা করা
সকল বিষয়গুলো মেনে চললে শারীরিক দুর্বলতা সহজে দূর করা সম্ভব হবে। শারীরিক
দুর্বলতা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ এবং সচেতনতা অবলম্বন করা
জরুরী। শারীরিক দুর্বলতা সম্পর্কিত কোন তথ্য জানতে চাইলে কমেন্ট সেকশনে
প্রশ্ন করুন।
মিডপয়েন্ট ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url