শসার গুনাগুন এবং উপকারিতা ও অপকারিতা

আমাদের নিকট অতি পরিচিত একটি সবজি হলো শসা। বর্তমানে আমাদের দেশে সারা বছর জুড়ে শসার চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে শসা একটি সহজলভ্য সবজি। শসার গুনাগুন এবং উপকারিতা ও অপকারিতা অপরিসীম। রূপচর্চা, শারীরিক সুস্থতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও বিভিন্ন কাজে শসা ব্যবহৃত হয়।খালি পেটে শসা খেলে তা ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকর অথবা অনেকে শরীরে অতিরিক্ত মেদ কমানোর জন্য রাতে ঘুমানোর আগে শসা খায় ‌ তাছাড়া শসার রস তুলে দিলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হয়। তাছাড়া শসা ব্লাড প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করে এবং এসিডিটির সহ পেট ব্যথার বিভিন্ন সমস্যা দূর করে দেয়।
শসার গুনাগুন এবং উপকারিতা ও অপকারিতা
শসা দেহের বিষাক্ততা ও পানি শূন্যতা দূর করে ভিটামিন ও খনির সরবরাহ করে হজম শক্তি ও চোখের জ্যোতি কে বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের বড় রোগ যেমন ডায়াবেটিস ক্যান্সার থেকে মুক্তি দেয় এবং কিডনিকে সুস্থ রাখে। তাছাড়া মুখ পরিষ্কার করতে ফেসিয়াল হিসেবে শসার ব্যবহার করা হয়।

শসার বিভিন্ন গুনাগুন

বিভিন্ন গুনাগুন সমৃদ্ধ শসা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
  • শসা শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে।
  • নিয়মিত শসা খেলে হিট স্ট্রোক এড়ানো সম্ভব হয়ে থাকে।
  • তীব্র গরমে ঘামের সাথে শরীর থেকে ইলেকট্রোলাইটস বের হয়ে যায় , শসা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে ইলেকট্রোলাইটস এর ঘাটতি পূরণ হয়।
  • শসা একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি। শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম, আয়োডিন, ফসফরাস, কপার, ম্যাগনেসিয়াম ,ভিটামিন সি ,ক্যারোটিন, ইত্যাদি যা আমাদের শরীরের জন্য অতীব জরুরী।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত শশা খাওয়ার ফলে শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।
  • শসাতে বিদ্যমান ফাইবার এবং পানি দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় ।
  • শোষাতে প্রচুর পরিমাণে প্যান্টোথেনিক এসিড রয়েছে যা আমাদের কোষকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
  • শরীরে পানির অভাব পূরণ করে।
  • শশাতে খুব কম পরিমাণে ক্যালরি থাকে তা শরীরের বাড়তি ফ্যাট কমাতে সহায়তা করে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহয়তা করে শসা।
  • মুখের দুর্গন্ধ দূর করণে শসার ভূমিকা অতুলনীয়।
  • টুকরো টুকরো করা শসা মুখের মধ্যে তালুর ওপরে রেখে দিলে মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া দূর করে, মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়তা করে এবং মুখের মধ্যেকার স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
  • নিয়মিত শসা খেলে এবং ফেসপ্যাক হিসেবে শসা ব্যবহার করলে ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • শীতলকারী শসা ত্বকের রোদে পোড়া ভাব, জ্বলনি , ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।
  • গোলাকার ফালি খালি করে কাটা শসা চোখের ওপরে দিয়ে রাখলে চোখের জ্বালাপোড়া কমে এবং ঠান্ডা অনুভূতি হয়।
  • শরীরকে ঠান্ডা রাখতে শসার ভূমিকা অপরিসীম।
  • শসার তে সিলিকা থাকায় আমাদের শরীরের জমে থাকা ইউরিক এসিড কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে বাত ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
  • শসার রস গাজরের রসের সঙ্গে মিশিয়ে একসঙ্গে পান করলে শরীরের ইউরিক এসিডের পরিমাণ অনেকটা কমে যায় ।
  • প্রায়ই মানুষের ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পর হালকা মাথা ব্যথা করে এবং শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে। নিয়ম করে প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি শসা খেয়ে ঘুমানো যায় তাহলে সকালের শরীর অনেকটা সতেজ লাগে এবং রাতে বেশ ভালো ঘুম হয়।
  • শসাতে থাকা ভিটামিন বি ও সুগার এর ফলে সকালে মাথা হালকা লাগে এবং শরীর সতেজ হয়ে থাকে। তীব্র গরমে শরীর ও মন সতেজ রাখার অন্যতম কৌশল হল নিয়মিত শসা খাওয়া।

শসা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা

শসা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আমাদের শরীরের মধ্যে কর বর্জ্য অভিশপ্ত পদার্থ দূর করণে শসা অনেকটা অদৃশ্যময় ঝাড়ুর ন্যায় কাজ করে। প্রতিদিন নিয়ম করে যদি শসা খাওয়া যায় তাহলে কিডনিতে সৃষ্ট পাথরও নষ্ট হয়ে গলে যায়। শসা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি বাড়ায়।
  • শসা আমাদের চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । ফালি করে রাখা শসা চোখের উপর দিয়ে রাখলে চোখের পাতার সব ময়লা পরিষ্কার করে দেয়। চোখের পানি পড়া বন্ধ করতে ও সাহায্য করে শসা।
  • রূপচর্চার অন্যতম একটি উপাদান হলো শসা। প্রচন্ড গরমে মুখ ত্বক অনেকটা তেলতেলে হয়ে যায় যার ফলে অতিরিক্ত ব্রণ দেখা দেয়। নিয়মিত শসার রস ব্যবহারের ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর হয় এবং ব্রণ কমে যায়। আমাদের ত্বকের টেক্সচার উন্নত করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি এক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকের বিভিন্ন টক্সিক পদার্থ বের করে দেয় এবং ত্বকের আদ্রতা বৃদ্ধি করে। অ্যালোভেরার জেলের সাথে শসার রস মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে তা ব্যবহার করলে ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর হয়। দীর্ঘদিনের কালো দাগ দূর করতে কচি শসার রসের ব্যবহার অত্যন্ত উপকারী।
  • বাংলা প্রবাদে রয়েছে, ডায়াবেটিস হোক বা ডায়রিয়া সবের জন্যই রয়েছে শসা। শসা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকম রোগ থেকে মুক্তি দেয়। দীর্ঘদিনের গ্যাস বদহজম অরুচি ইত্যাদি নানা রকমের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায় শসা খাওয়ার মাধ্যমে। কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ নামক প্রদাহ জনিত জটিল অসুস্থতা থেকে মুক্তি মেলে শসা খাওয়ার মাধ্যমে। রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তের ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে শসা। পাচনতন্ত্র সুস্থ রাখতে এবং দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রেহাই পেতে শসার ভূমিকা অপরিসীম। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে থাকায় শরীরের হাড় মজবুত করে।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে শসা। অতিরিক্ত বাড়তি ওজন হ্রাস করার সময় মূল উপাদান হলো শসা। প্রতিদিন নিয়ম করে শশার জুস খেলে ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে প্রায় ৬ থেকে ৭ কেজি ওজন কমানো সম্ভব। পেটের বাড়তি খোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে শসা। শসার বীজ শরীর থেকে বাড়তি পানি বের করতে সাহায্য করে এবং মাংসপেশী শিথিল করে যার ফলে ওজন কমাতে সাহায্য হয়। শসা খাওয়ার ফলে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে না সঠিক থাকতে বাধ্য হয় যার ফলে পেটের বাড়তি মেদ হ্রাস পেতে বেশি সময় প্রয়োজন হয় না।
  • শসা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। শসার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি ফাইভ, ভিটামিন বি ৭ ,এবং ভিটামিন বি১ যা আমাদের শরীরের মানসিক চাপ রোধে সহায়তা করে।
  • শসার সকল উপকারিতার মধ্যে একটি অন্যতম উপকারিতা হলো গরমের সময় শসা খাওয়ার ফলে দেহের পানি শূন্যতা দূর হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে শসা খাওয়ার ফলে পিপাসা মিটে যায়। অনেকেই জানেনা শসার প্রায় ৯০% পানি।
  • বর্তমানে এই দিন দিন বৃদ্ধি প্রাপ্ত তাপদাহের সময় শসা দেহের ভেতর ও বাইরের তাপকে শোষণ করে। যদি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে শরীরে জ্বালাপোড়া এবং প্রচন্ড উত্তাপ এর অনুভূত হয় তাহলে কিছু শসা কেটে খেয়ে নিলে পেটে ও শরীরে আরাম পাওয়া যাবে। এবং সূর্যের তাপ থেকে রক্ষার জন্য শসা কেটে সেগুলো ত্বকে ঘষে নিলে ত্বকের জ্বালাপোড়া কমে যাবে।

শসা খাওয়ার বিভিন্ন অপকারিতা

একটি মুদ্রার যেমন এপিট- ওপিট দুইটি রয়েছে ঠিক তেমনি শসার উপকারিতার পাশাপাশি রয়েছে নানান রকমের অপকারিতা।শরীর ও স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে অনেকেই প্রতিনিয়ত শসা খান। কখনো সালাদ হিসেবে কখনো বা ভাত তরকারির সঙ্গে আবার কখনো ওজন কমাতে একাধিক বার খালি মুখে শসা খায়। অধিক গুণ সম্পন্ন শসার কিছু অপকারিতাও রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত শসা গ্রহণের ফলে নানা রকমের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  • অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের মধ্যে কিউকারবিটাসিনস ও টেরাসাইক্লিক টাইটেরপেনয়ডন নামক দুটি টক্সিন পদার্থ জমা হয়। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই টক্সিন পদার্থগুলো শরীরের ভেতরে নানা রকমের রোগের সৃষ্টি করতে পারে।
  • ডাক্তারি গবেষণায় ধরা পড়েছে যে প্রয়োজনের অত্যাধিক শসা গ্রহণের কারণে দেহের মধ্যে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। দেহে অতিরিক্ত পটাশিয়াম বৃদ্ধির কারণে হাইপারক্যালেমিয়া নামক রোগের সৃষ্টি হয়। এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের পেটের নানা রকম সমস্যা হতে পারে যেমন পেটে অতিরিক্ত গ্যাস ঘন ঘন পেটব্যথা এবং কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষ্য থাকে।
  • শসাতে রয়েছে কিউকারবিটিন নামক একটি উপাদান। কিউকারবিটিন নামক উপাদানটি আমাদের শরীরে ডাইউরেটিক হিসেবে কাজ করে। সহজ ভাষায় প্রকাশ করলে বলা যায় যে কেউকারবিটিন উপাদানটি প্রসাবের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। যার ফলে ঘন ঘন প্রসাব হয়। এতে শরীরে পানি শূন্যতা সৃষ্টি হয় যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
  • কিছু কিছু মানুষকে শসা খাওয়া থেকে বিতাড়িত থাকাই ভালো যেমন: সাইনোসাইটিস আক্রান্ত রোগীদের।শসা একটি ঠান্ডা সবজি । সাইনোসাইটিস আক্রান্ত রোগীদের ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে নানান সমস্যা হতে পারে তাই এমন রোগীদের শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো।
  • ওজন কমাতে শসার ভূমিকা অপরিসীম।কিন্তু অতিরিক্ত রোগা -সোগা ব্যক্তি যদি প্রয়োজনের অধিক মাত্রায় শসা গ্রহণ করে ,সেক্ষেত্রে সে ব্যক্তির নানা রকমের রোগ ব্যাধির সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া ওজন কম রয়েছে এ অবস্থায় শসা না খাওয়াই উত্তম কারণ শসা খাওয়ার ফলে ওজন আরো অনেক কমে যাবে।
  • ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে প্রতিনিয়ত শসা খাওয়ার ফলে ঘটতে পারে নানান বিপত্তি ও বিপর্যয়। অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে শরীরের পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা অনেকটা কমে যায় ফলে শরীর অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • খুদা পাওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণে শসা খেলে পেটের নানা রকমের সমস্যা শুরু হতে পারে যেমন পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, বদহজম, পেটে গ্যাসের সমস্যা ইত্যাদি। নানা রকমের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

শসা দিয়ে বিভিন্ন ফেসপ্যাক তৈরির নিয়ম 

রূপচর্চা ও ত্বকের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে শসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শশা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক তৈরি করে সেটি নিয়মিত ব্যবহার করার মাধ্যমে ত্বকের সৌন্দর্য, উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাছাড়া শসায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি ত্বককে উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ডার্ক সার্কেল দূর করে দেয়। তাছাড়া শসা ত্বকের শুষ্কতা কমানোর পাশাপাশি রোধে পড়ার দাগ কমিয়ে দেয়। মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করে দেয় এবং মুখের বলিরেখা দূর করে দেয়। আসুন জেনে নিন শসা দিয়ে বিভিন্ন ফেসপ্যাক তৈরির নিয়ম সম্পর্কে।
  • শসা ও এলোভেরার ফেসপ্যাক: শসা দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য কিছু শসা কুচি করে কেটে নিয়ে তাতে এলোভেরা জেল ও গোলাপজল মিশাতে হবে। মেশানো হয়ে গেলে সেই ফেস প্যাকটি ১৫ মিনিটের জন্য মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিন এইভাবে দুই থেকে তিনবার ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধি পাবে।
  • শসার আইস কিউব ফেসপ্যাক: এই গরমের সময় ত্বককে রোদের জ্বালাপোড়া থেকে রক্ষার জন্য শসার রস এবং সামান্য পরিমাণে ভিটামিন ই অয়েল এর মিশ্রণ করে আইস ট্রে তে মিশিয়ে নিতে হবে। মেশানো হয়ে গেলে সম্পূর্ণ রাতের জন্য ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। পরে যখন রোদ থেকে আসার পর তোকে জ্বালাপোড়া করবে তখন ফেস প্যাকটি ব্যবহার করলে আরাম পাওয়া যাবে।
  • টক দই এবং শসার ফেসপ্যাক: ছোট ছোট যা-কিছু শোষা ব্লেন্ডারে নিয়ে ব্লেন্ড করে তাতে ৩/৪ চামচ টক দই ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। মেশানো হয়ে গেলে আধা ঘন্টার জন্য সেটি আপনার ত্বকে প্রয়োগ করতে হবে। ত্বকে এই ফেসপ্যাক টি প্রয়োগ করার আধাঘন্টা পর ঠান্ডা পানি দিয়ে সম্পূর্ণ মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এই ফেসপ্যাক টি ব্যবহারের ফলে ত্বক নরম এবং কোমল হয় এবং বিভিন্ন ধরনের তৈলাক্ত ও ব্রণের সমস্যা দূর হয়ে যায়। এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করে রোদে পোড়া দাগ দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করে ত্বকের আদ্রতা স্বাভাবিক পর্যায়ে বজায় রাখে।
  • শসা এবং দুধের তৈরি ফেসপ্যাক: কিছু কচি শসার পেস্ট এর সাথে দুই টেবিল চামচ কাঁচা দুধ এবং সামান্য পরিমাণে হলুদ ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন শুষ্ক স্থানে আদ্রতা ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পেরে। এই ফেসপ্যাক টি অধিকাংশ শীতকালে ব্যবহার করা হয়। মুখ গলা ও ঘাড়ের শুষ্কতা দূর করার ক্ষেত্রে এই ফেসপ্যাকটি অধিক কার্যকরী বলে বিবেচিত।
  • মুলতানি মিট্টি এবং শসার ফেসপ্যাক: তিন টেবিল চামচ শসার রসের সাথে দুই টেবিল চামচ মুলতানি মাটি এবং দুই টেবিল চামচ গোলাপজল একসঙ্গে মিশ্রণ করে একটি পেজ তৈরি করে গলা এবং ঘাড়ে প্রায় ৩০-৪০ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখতে হবে। সময় পার হওয়ার পর ফেসপ্যাকটি শুকিয়ে গেলে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এই ফেসপ্যাক টি ব্যবহার করার ফলে ত্বকের দাগ দূর হওয়ার পাশাপাশি উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
  • শসা ও মধুর ফেসপ্যাক: এই ফেসপ্যাক টি ত্বককে হাইডেড করার জন্য এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী বলে বিবেচিত। এই ফেসপ্যাকটি তৈরি করার জন্য প্রথমত চোষা গ্রেট করে কেটে নিতে হয়। শশা কাটার পর সেখানে এক চামচ গোলাপ জল ও মধু মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে আধা ঘন্টার জন্য রেখে দিতে হয়। সময় পার হয়ে যাওয়ার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।

লেখক এর মন্তব্য 

আজকে আমরা শসার গুনাগুন এবং উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। শসা অত্যন্ত উপকারী ও বিভিন্ন গুনাগুন সমৃদ্ধ একটি সবজি। এটি বিভিন্নভাবে আমাদের শরীরের ও ত্বকের যত্ন নিয়ে থাকে। আশা করি, আমাদের পোস্টটি পড়ে আপনি শসার সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পেয়ে গেছেন। ধৈর্য সহকারে সম্পন্ন পোস্ট টি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এই পোস্ট সংক্রান্ত যেকোনো রকমের তথ্য জানতে চাইলে আমাদের কমেন্ট সেকশনে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিডপয়েন্ট ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url