কেশর আলু খাওয়ার নিয়ম - কেশর আলু কিভাবে খেতে হয়
কেশর আলু খাওয়ার নিয়ম- কেশর আলু কিভাবে খেতে হয়? এই বিষয় গুলো অনেকেই জানেন
না। তাদের জন্য আজকে আর্টিকেলে কেশর আলু কিভাবে খেতে
হয়? এই বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। কেশর আলু
কিভাবে খেতে হয়? জানতে আমার সাথেই থাকুন।
কেশর আলু খাওয়ার নিয়ম
কেশর আলুতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাই কেশর আলু খাওয়ার উপকারিতা অনেক।
কেশর আলুতে রয়েছে শর্করা, ফাইবার, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন, চর্বি, পানি
ইত্যাদি। আমরা অনেকেই কেশর আলু খাওয়ার উপকারিতা জানি না বিধায় কেশর আলু খেতে
চাই না। কেশর আলু খাওয়ায় আগে কেশর আলু খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে।
অনেকেই কেশর আলু খাওয়ার নিয়ম জানেন না। যার ফলে কেশর আলুর পুষ্টি উপাদান
সম্পূর্ণ রূপে পান না। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কেশর আলু খাওয়ার নিয়ম
কেশর আলু বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়।
- কেশর আলু ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করার পর কাঁচায় খাওয়া যায়।
- কেশর আলু ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করার পর সিদ্ধ করে খাওয়া যায়।
- কেশর আলু ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করার পর বিভিন্ন উপকরণের সাথে মিশিয়ে সালাদ তৈরি করে খাওয়া যায়।
কেশর আলু কে ঠান্ডা আলু কেন বলে
কেশর আলু বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। কেশর আলুকে ঠান্ডা আলু বলা হয়। এখন
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে কেশর আলু কে ঠান্ডা আলু কেন বলে? কেশর আলু কে ঠান্ডা
আলু কেন বলে? এ প্রশ্নের উত্তর আপনি আজকের আর্টিকেলে পেয়ে যাবেন।
কেশর আলু কে ঠান্ডা আলু বলা হয় কারণ এটি খেতে সুমিষ্ট এবং ঠান্ডা। আবার কেশর আলু
শীতকালীন ফল। এটি বিভিন্ন শীতকালীন অঞ্চলে চাষ করা হয়। তাই এটি উৎপাদনগতভাবে
ঠান্ডা হয়ে থাকে। বেশি পরিমাণে কেশর আলু খেলে আমাদের ঠান্ডা জনিত রোগ হয়।
উল্লেখিত কারণগুলোর কারণে কেশর আলু কে ঠান্ডা আলু বলে।
শাক আলুর পুষ্টিগুণ
আপনার অনেকে দেখে থাকবেন একই জিনিস বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। তেমনই
কেশর আলু অনেক জায়গায় শাক আলু নামে পরিচিত। কেশর আলু আর শাক আলু একই জিনিস। শাক
আলুর উপকারিতা কেশর আলুর উপকারিতা একই।
শাক আলুর পুষ্টিগুণ অনেক। আমরা অনেকেই শাক আলুর পুষ্টিগণ সম্পর্কে জানিনা। শাক
আলুতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
শাক আলুতে রয়েছে শর্করা, ফাইবার, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন, চর্বি, পানি
ইত্যাদি।
শাক আলুর পুষ্টিগুণ সমূহ নির্দিষ্ট অনুপাতে কেশর আলুতে থাকে। আমাদের দেহের
শর্করার চাহিদা পূরণে শাক আলু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শাক আলুতে প্রচুর
স্টার্চ ও আমিষ থাকে। নিচে শাক আলু পুষ্টিগুণ তুলে ধরা হলো।
কাঁচা অবস্থায় প্রতি ২০০ গ্রাম শাক আলুর পুষ্টিগুণ সমূহ:
- ক্যালোরি থাকে - ৩১৮ কে জু
- শর্করা থাকে - ১৭.৬ গ্রাম
- চিনি থাকে - ৩.৬ গ্রাম
- খাদ্য আঁশ থাকে - ৯.৮ গ্রাম
- চর্বি থাকে - ০.২ গ্রাম
- প্রোটিন থাকে - ১.৪ গ্রাম
- ভিটামিন সি থাকে - ৪০.৪ মিগ্রা
- ভিটামিন ই থাকে - ১ মিগ্রা
- ভিটামিন কে থাকে - ০.৬ মিগ্রা
- ক্যালসিয়াম থাকে - ২৪ মিগ্রা
- আয়রন থাকে - ১.২ মিগ্রা
- ম্যাগনেসিয়াম থাকে - ২৪ মিগ্রা
- সোডিয়াম থাকে - ৮ মিগ্রা
- পটাশিয়াম থাকে - ৩০০ মিগ্রা
- জিংক থাকে - ০.৪ মিগ্রা
- পানি থাকে - ৯০ ভাগ
কেশর আলুর জুস বানানোর নিয়ম
বর্তমানে সব সবজি বা ফলের জুস তৈরি করে খাওয়াটা এটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। তাই
অনেকে কেশর আলুর জুস বানানোর নিয়ম জানতে আগ্রহী। কেশর আলুর জুস বানানোর নিয়ম
খুবই সহজ। কেশর আলু মিষ্টি হওয়ায় এর জুসের স্বাদ স্বাদ ভালো হয়।
কেশর আলুর জুস বানানোর নিয়ম জেনে নিয়ে আপনিও খুব সহজেই কেশর আলুর জুস বানাতে
পারবেন। তাহলে আর দেরি না করে চলুন কেশর আলুর জুস বানানোর নিয়ম জেনে নেওয়া যাক:
প্রথমে ভালো ফ্রেস কেশর আলু সংগ্রহ করতে হবে। এরপর সেগুলো ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে
পরিষ্কার করতে হবে। কাঁচা কেশর আলু ছিলিয়ে নিতে, কুচি কুচি করে কেটে নিন। এর পর
কেশর আলুর টুকরো গুলো জুস মেকার অথবা ব্লেন্ডার দিয়ে ব্লেন্ড করে ফেলুন। ব্লেন্ড
করার সময় প্রয়োজন মত পানি যোগ করবেন। তৈরি হয়ে গেল কেশর আলুর জুস।
কেশর আলু দিয়ে রূপচর্চা
কেশর আলু দিয়ে রূপচর্চা বিষয়টা শুনতে হয়তো একটু অদ্ভুত লাগছে। কেশর আলু দিয়ে
রূপচর্চা করা যায়। তবে খুব একটা উপকার পাওয়া যায় না। কেশর আলুতে মুখের জন্য
উপকারী শুধু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এছাড়া কেশর আলুতে তেমন কোনো উপাদান নেই।
কেশর আলু দিয়ে রূপচর্চা করার জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। নিচে কেশর
আলু দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়ম তুলে ধরা হলো:
- প্রথমে ভালো ফ্রেস কেশর আলু সংগ্রহ করতে হবে। এরপর সেগুলো ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। কাঁচা কেশর আলু ছিলিয়ে নিতে, কুচি কুচি করে কেটে নিন। এর পর কেশর আলুর টুকরো গুলো জুস মেকার অথবা ব্লেন্ডার দিয়ে ব্লেন্ড করে ফেলুন।
- কেশর আলু ব্লেন্ড করার পর যে পেস্টটি তৈরি হলো সেটি মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর সেটি ধুয়ে ফেলুন।
কেশর আলু দিয়ে চুলের যত্ন
কেশর আলু দিয়ে চুলের যত্ন নেওয়া সম্ভব। কেশর আলু চুলের জন্য উপকারী। কারণ কেশর
আলুতে আছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, মিনারেল। এই উপাদান গুলো চুলের জন্য অত্যন্ত
উপকারী।
কেশর আলু দিয়ে চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য আপনাকে বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে
হবে। কারণ সঠিক উপায়ে কেশর আলু দিয়ে চুলের যত্ন না নিলে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
কেশর আলু দিয়ে চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় নিম্নরূপ:
প্রথমে ভালো ফ্রেস কেশর আলু সংগ্রহ করতে হবে। এরপর সেগুলো ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে
পরিষ্কার করতে হবে। কাঁচা কেশর আলু ছিলিয়ে নিতে, কুচি কুচি করে কেটে নিন। এর পর
কেশর আলুর টুকরো গুলো জুস মেকার অথবা ব্লেন্ডার দিয়ে ব্লেন্ড করে ফেলুন। এরপর যে
পেস্টটি তৈরি হলো এটি সংগ্রহ করুন।
এখন আপনি চাইলে কেশর আলুর পেস্ট এর সাথে মধু অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে চুলে ব্যবহার
করতে পারেন। অথবা শুধু কেশর আলুর পেস্ট এর সাথে হালকা পানি মিশিয়ে মাথাই ম্যাসাজ
করতে পারেন। সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করছে।
(FAQs) কেশর আলু সম্পর্কে কিছু সাধারণ প্রশ্ন
১) প্রশ্ন: কেশর আলু ফল নাকি সবজি?
উত্তর: কেশর আলু একধরনের সবজি।
২) প্রশ্ন: কেশর আলু কোন পদ্ধতিতে চাষ করা হয়?
উত্তর:কেশর আলু জুম পদ্ধতিতে চাষ করা হয়।
৩) প্রশ্ন:কেশর আলু বাচ্চাদের খাওয়ার উপযোগী কিনা?
উত্তর: কেশর আলু বাচ্চাদের খাওয়ার উপযোগী। বাচ্চাদের শরীরের সরকার চাহিদা
পূরণের জন্য কেশর আলু অনেক উপযোগী।
৪) প্রশ্ন: গর্ভবতী মহিলাদের কেশর আলু খাওয়া যাবে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, অবশ্যই গর্ভবতী মহিলাদের কেশর আলু খাওয়া যাবে।
৫) প্রশ্ন: কেশর আলু মুখে তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সক্ষম?
উত্তর: হ্যাঁ, কেশর আলু মুখে তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সক্ষম।
লেখকের শেষ কথা
আজকের আর্টিকেল আপনার ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করে
তাদের কেশর আলু খাওয়ার উপকারিতা - কেশর আলুর পুষ্টিগুণ এবং কেশর আলু খাওয়ার
নিয়ম- কেশর আলু কিভাবে খেতে হয়? বিষয়গুলো জানার সুযোগ করে দিন। ধন্যবাদ শেষ
পর্যন্ত থাকার জন্য।
মিডপয়েন্ট ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url