কম খরচে গরু মোটাতাজাকরণ এর জন্য খাদ্য তালিকা - গবাদি পশুকে মোটাতাজা করার উপায়
21 Dec, 2024
বর্তমানে দেশে, বিদেশে, গ্রামে, শহরে বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন
গবাদিপশু পালন করা হয়। অনেকে শখের বসে গবাদিপশু পালন করলেও বর্তমানে এটি একটি
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে হিসেবে বিবেচিত। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে লাভবান হওয়ার জন্য
সকলে গবাদিপশুকে মোটাতাজা করার সঠিক উপায় সম্পর্কে জানতে চাই। গবাদিপশুকে
মোটাতাজাকরণের জন্য সঠিক খাদ্য তালিকা প্রয়োজন। গবাদিপশুর বিভিন্ন ধরনের
স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে তাকে অবসর দেওয়ার মাধ্যমে, শুধু পর্যাপ্ত খাদ্য
প্রদান দ্বারা স্বাস্থ্যবান করে তোলার পদ্ধতিকেই মোটাতাজাকরণ বলা হয়।
বর্তমানে গবাদিপশুকে মোটাতাজাকরণ একটি লাভবান ব্যবসায়ের পরিণত হয়েছে।
গবাদিপশু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে কাজ করা লাগে।
গবাদি পশুর আবাসন, খাদ্য, বয়স, ওজন সবকিছু একটি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মাঝে রাখা
লাগে।
গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ কি?
গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ হচ্ছে এমন এক ধরনের পদ্ধতি, যেখানে পশুর দৈনন্দিন
কার্যক্রম যেমন দুধ দেওয়া, বাচ্চা দেওয়া, হাল চাষ করা অথবা ষাঁড়কে প্রজননের
কাজে ব্যবহার করা এই সকল কার্যক্রম থেকে বিরত রেখে পর্যাপ্ত পরিমাণে অধিক
পুষ্টিকর ও দানাদার বিভিন্ন ধরনের খাদ্য প্রদানের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবান করে
গড়ে তোলা। এই গবাদিপশু মোটাতাজা করনের জন্য প্রায় ৯০ দিন প্রকল্প অনুযায়ী
কাজ করা লাগে। কোরবানির সময় বিক্রয়ের লক্ষ্যে অথবা বাজারে মাংস বিক্রয়ের
উদ্দেশ্যে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ করা হয়। বর্তমানে মাংসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার
ফলে এই ব্যবসাটি অনেক লাভজনক ব্যবসা। গরুকে উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার, পর্যাপ্ত
প্রোটিন ও সুষম খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে গরুর ৩ মাসের মধ্যে দ্রুত ওজন বাড়িয়ে
বিক্রি করে দেওয়া হয়।
গবাদিপশুকে মোটাতাজা করা সঠিক উপায়
দেশের মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে গবাদি পশুকে মোটাতাজাকরণ একটি
গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক কাজ। গবাদি পশু মোটাতাজাকরণের মাধ্যমে চামড়া, গোবর
উৎপাদন, পরিবেশ উন্নয়ন এবং বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে। আমাদের দেশে
প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লাখ গরু কোরবানি ঈদের সময় প্রতিবছর কোরবানি করা হয়। এজন্য
গবাদিপশুকে মোটাতাজা করার সঠিক উপায় সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।গবাদিপশু ও ক্রয়
ও নির্বাচন করা হলো গবাদিপশু মোটাতাজাকরনের প্রথম পদক্ষেপ।গবাদিপশুকে
মোটাতাজাকরণের পূর্বে গবাদিপশু ক্রয় বা বাছাই করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আপনি
চাইলে গবাদি পশু হাট থেকে অথবা স্থানীয় পরিচিত গবাদিপশুর ব্যবসায়ী নিকট থেকে
ক্রয় করতে পারেন।
গবাদিপশু কেনার সময় পশুর জাত, লিঙ্গ, শরীরের অবস্থা ও বয়স সকল বিভিন্ন বিষয়
সম্পর্কে লক্ষ্য রাখতে হয়। এবং বাজারে বিদ্যমান চাহিদা অনুযায়ী গরু কিনতে
হয়। আপনি পূর্ব থেকে টাকা জমিয়ে রাখলে যেই সময় বা মৌসুমে গরুর দাম কমে, তখন
গবাদি পশু ক্রয় করবেন। সাধারণত যখন বর্ষাকালে মাঠে ঘাটে খাবারের সংকট দেখা
দেয় তখন গরুর দাম পড়বে তুলনায় হ্রাস পায়। এই সময় গরু কিনলে কম দামে কেনা
যায়। গবাদিপশু ক্রয়ের ক্ষেত্রে বয়স দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে হলে সহজে
মোটাতাজাকরণ করা যায়। কারণ বয়স্ক গরু মোটাতাজাকরণের জন্য সাধারণত উপযুক্ত বলে
বিবেচিত হয় না। বর্তমান বাজারে ষাঁড়ের মাংসের মূল্য ও চাহিদা বেশি থাকার
কারণে ষাঁড় গরু ক্রয় করায় যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে। ক্রয় করার
সময় খেয়াল রাখতে হবে যে , কয় কৃত প্রাণীর দেহের কাঠামো একটু বড় হয়। এজন্য
গবাদি পশু ক্রয় করার ক্ষেত্রে বেশি উচ্চতার পশু ক্রয় করা উচিত। বড় ধরনের
কঙ্কালসার গরুকে সঠিক খাদ্য প্রয়োগের মাধ্যমে অধিক পরিমাণে মাংস উৎপন্ন করা
যায়।
গবাদিপশু ক্রয়ের পূর্বে বিবেচ্য বিষয়
গবাদিপশু ক্রয়ের সময় দেখতে হবে তার কোন ধরনের রোগ বালাই আছে কিনা। কোন ধরনের
সংক্রামক রোগ বা ক্ষুরা রোগ থাকলে সে সকল গরু ক্রয় করা ঝুঁকিপূর্ণ। এই ধরনের
কোন রোগ থাকলে তা পশুর মৃত্যুর ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বাড়িয়ে দেয়। গরু ক্রয়
করার সময় যদি দেখেন গরুর ক্ষুরার মত ক্ষত আছে, তাপমাত্রা স্বাভাবিক নেই, চোখ
লাল লাল এবং ছল ছল করে এবং যদি প্রাণীটি অস্থির থাকে তাহলে বুঝে নিবেন এই
প্রাণীর ক্ষুরা রোগ রয়েছে। এই রোগ ব্যতীত অন্য কোন রোগ থাকলে সমস্যা নেই।
অর্থাৎ গরুর যদি পাতলা পায়খানা বা রক্ত আমাশয় অথবা হাড্ডি স্যার হয়, এই সকল
সমস্যা সমাধান করা সম্ভব গরু মোটাতাজাকরণের মাধ্যমে।
গরু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরী। গরু
ক্রয়ের পূর্বে গরুর গোবর পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় সেখানে কৃমির ডিম আছে,
তাহলে বুঝে নিতে হবে যে গরুর পরিপাকতন্ত্র দুর্বল এবং গরুর পুষ্টিহীনতার সমস্যা
রয়েছে। এমত অবস্থায় গরু অপুষ্টিতে এবং ক্ষুধা মন্দাতে ভুগতে পারে। এ থেকে
পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য গরুর মল পরীক্ষা করে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী কৃমির ঔষধ ও এন্টিবায়োটিক প্রদান করা উচিত। গবাদি পশুকে
মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে চার থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। অনেকে গরু
মোটাতাজাকরণের জন্য গরুকে স্টেরয়েড জাতীয় খাবার খাওয়ায় যা সম্পূর্ণ অনৈতিক
ও নিষিদ্ধ। এটি গরুর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর ফলে গরুর মৃত্যু হতে
পারে। কারণ স্টেরয়েড জাতীয় খাবার প্রাণীর মেটাবলিজম কে বাড়িয়ে দেয়, যার
ফলে পশুর লিভার হৃৎপিণ্ড স্বাভাবিকভাবে কাজ করে না। আর গরু ক্রয়ের পর বিভিন্ন
ধরনের সমস্যা বা রোগ ব্যাধি দেখা দিলে গরুকে প্রয়োজনীয় টিকা প্রদান করতে হবে।
গবাদিপশু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত বাসস্থান
গবাদিপশু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে সঠিক আবাসন নির্বাচন এবং সেই আবশনে পর্যাপ্ত
প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা থাকা গরুর মাংস বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। ছায়ার জন্য উপরে শেডের ব্যবস্থা করা উচিত। আবাসন স্থানে গরুর
হাটাফেরা ও চলাচল করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকা জরুরি। গরুর আবাসস্থান এমন
করা লাগবে যেখানে প্রচন্ড গরম বা ঠান্ডার হাত থেকে গরু রক্ষা পায়। আপনি চাইলে
বিভিন্ন দেশি উপকরণ যেমন বাস ও ছাউনি দাঁড়াই গরুর আবাসনি স্থান তৈরি করতে
পারেন। আপনার যদি পর্যাপ্ত বাজেট থাকে তাহলে আপনি শেড বানিয়ে গবাদি পশুর
বাসস্থান নির্মাণ করতে পারেন।
গবাদি পশুর বাসস্থানের পরিমাণ নির্ভর করবে যে আপনি কয়টি গরু মোটাতাজাকরণ
করবেন। প্রত্যেকটি গরুর জন্য ৪×৭ ফুট জায়গা রাখতে হয়। তাছাড়া আপনি চাইলে
১০-১৫ টি গরু একসাথে একটি গোয়াল ঘরে রাখতে পারেন। গরুর পাশে খাবারের জন্য একটি
চারি গোয়াল ঘরে রাখা উচিত। গবাদিপশু পালন করার স্থানের আশেপাশে টিউবয়েল
স্থাপন করা জরুরি। কারণ প্রতিনিয়ত গরুকে খাওয়ানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি,
বিভিন্ন ধরনের দানাদার খাবার মিশ্রণ করার ক্ষেত্রে পানির প্রয়োজন হয়। তাছাড়া
কয়দিন পর পর গরুকে গোসল করিয়ে দিলে গরু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। গরুর
বাসস্থানে গোবর ও মলমূত্র পরিষ্কারের জন্য সঠিক ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন।
মোটাতাজাকরণের জন্য সঠিক গবাদিপশু নির্বাচন
গবাদিপশু বা গরু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে লক্ষ্য রাখা
উচিত। নিচেই সকল বিষয়গুলি আলোচনা করা হলো।
প্রাণীর বংশ ও জাত যাচাই: গবাদি পশু ক্রয় করার পূর্বে দেখে নিতে
হবে যে পশুটির বংশ ভালো কিনা। কারণ পূর্বের বংশ বা জাত ভালো না থাকলে তার
প্রভাব পরবর্তী বাছুরদের ওপর পড়তে পারে। এজন্য বংশগত সমস্যা থাকলে যতই
খাবার দাবার ভালো করা হোক না কেন তাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে মাংস উৎপন্ন হবে
না এবং তারা লাভবান হতে পারবে না। এইজন্য গরু ক্রয়ের পূর্বে গরুর জাত ও
বংশ সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী।
বয়স: অল্প বয়সী গরুকে বেশি দিন ধরে খাওয়ানোর মাধ্যমে মোটাতাজা
করা হয়। এইজন্যে মোটাতাজা করনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যে গরুর বয়স
দুই থেকে তিন বছর অর্থাৎ যত কম হবে তত ভালো। গরু যদি বয়স্ক হয় তাহলে একটু
কম সময়ের মধ্যে সেটিকে তাজা করণ করা যায়। ষাঁড় গরু মোটাতাজা করার
ক্ষেত্রে এক দুই বছরের একটি বাছুর ক্রয় করা উপযুক্ত হবে।
স্বভাব: সাধারণত শান্ত জাতের বলদ গরুদের বেশি মাংসের গঠন বৃদ্ধি
পায় এবং খুব সহজে তাড়াতাড়ি মোটা হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে অস্থির ও
অস্বাভাবিক আচরণকারী গবাদি পশুর অধিক পরিমাণে ক্যালরি অপচয় হয়।
ওজন: যে সকল গরুর ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং শরীরে মাংস দ্রুত
উৎপন্ন হয় সেই সকল জাতের গরু ক্রয় করা উচিত। দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করার
লক্ষ্যে এবং সহজে লালন-পালন করার ক্ষেত্রে গাভী বা ষাঁড় গরু তুলনায় বলদ
গরু নির্বাচন করা উপযুক্ত বলে গণ্য করা হয়।
গঠন: গরু ক্রয়ের পূর্বে গরু শরীরের বিভিন্ন গঠন সম্পর্কে জেনে নিতে
হয়। গরুর মাথার গঠন, কপালের গঠন, চামড়ার গঠন, কাধের গঠন, পিঠের গঠন,
কোমরের গঠন, বুকের গঠন, শিং ও হাড়ের গঠন বিবেচনা করা উচিত । গুরু
ক্রয়ের পূর্বে দেখতে হবে যে গরুর মাথা ও গলা খাটো এবং চওড়া হতে হবে কারণ
এই ধরনের পশু দ্রুত বাড়ন্ত হয়। গরুর কপাল প্রশস্ত হলে পরিণত বয়সে তাদের
মাংসল হওয়ার সম্ভাবনা অধিক পরিমাণে থাকে। গরুর গায়ের চামড়া ঢিলেঢালা হলে
তাড়াতাড়ি গরুর মাংস বৃদ্ধি পায়। গরুর কাধ পুরু ও মসৃণ দেখে ক্রয় করা
উচিত। গরুর পীঠ চ্যাপ্টা হলে সে সকল গরুর অধিক মাংস উৎপন্ন হয়। তাছাড়া
খেয়াল রাখতে হবে যাতে ক্রয় কিছু গরুর গ্রুপ প্রশস্ত ও বিস্তৃত হয় তাহলে
শারীরিক বৃদ্ধির দ্রুত সম্ভব হয়। গরুর শরীরের হাড়ের আকৃতি মোটা হলে
সেগুলো ক্রয় করার জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে। যেসব গরুর পা অধিক মাংস
যুক্ত ও খাটো হয় সেগুলো গরু অধিক শক্তিশালী এবং মাংস উৎপাদনে সমর্থ হয়।
তাছাড়া গরু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে গরুর শিং খাটো ও মোটা দেখে গরু
নির্বাচন করা উচিত। তাছাড়া নিজের ক্ষেত্রে দেখতে হবে যাতে লেজ খাটো হয়।
কারণ বেশি লম্বা লেজযুক্ত পশু দুধ বেশি হলেও মাংস বেশি হয় না। এইজন্যে গরু
ক্রয়ের ক্ষেত্রে ছোট লেজ যুক্ত গরু ক্রয় করা উচিত।
জাত নির্বাচন: মোটাতাজা করার ক্ষেত্রে বলদ গরু এবং এড়েঁ গরু অধিক
উপযুক্ত বলে গণ্য করা হয় । তাছাড়া বিভিন্ন উন্নত জাতের গরুর ক্ষেত্রে কম
খাদ্যে দেশীয় গরু তুলনায় অধিক দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায়। এইজন্যে আজকাল
ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়াল, সিন্ধি ও দেশীয় সংকর জাতের গরুর ব্যাপক চাহিদা
রয়েছে।
রোগ ব্যাধিমুক্ত: গরু ক্রয়ের পূর্বে দেখে নিতে হবে যে গরুটি
রোগব্যাধিমুক্ত আছে কিনা। অনেক সময় গরুর গায়ে ঘা, পায়ে খোঁড়া অথবা
শরীরের টিউমার থাকে। এই সকল গরুর রক্তশূন্যতা সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
দেখা যায় যার ফলে গরুটির স্বাস্থ্যের ক্ষতি সাধন হয়। এ সকল গরু
বাণিজ্যিকভাবে ক্রয় করা অলাভজনক। তাই গরু নির্বাচনের পূর্বে রোগ ব্যাধি
মুক্ত গরু নির্বাচন করা উচিত।
মোটাতাজাকরণের জন্য সঠিক খাদ্য তালিকা
গরু মোটাতাজা করানোর জন্য তাকে সঠিক খাদ্য প্রদান করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
একটি কাজ। সঠিকভাবে দানাদার খাদ্য মিশ্রণ করে তৈরি করতে পারলে সেগুলোতে সকল
প্রয়োজনীয় পুষ্টি বিদ্যমান থাকে। এবং এ সকল পুষ্টি গ্রহণ করার মাধ্যমে গরুর
মাংস উৎপাদনের ক্ষমতা বেড়ে যায়। আবার অনেক সময় কোন খাদ্য উপাদানের ঘাটে
থাকার কারণে পুষ্টি জনিত সমস্যায় গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এইজন্য বিশেষজ্ঞদের
পরামর্শ গ্রহণ করে গরুকে সবসময় পর্যাপ্ত সঠিক খাদ্য প্রদান করা প্রয়োজন।
গরুকে অতিরিক্ত পরিমাণে ইউরিয়া খাওয়ালে এতে বিষক্রিয়া দেখা দেওয়ার
সম্ভাবনা থাকে। গরুকে বিভিন্ন জাতের দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি চালের ধোয়া
পানি, ভাতের মার, শাক সবজির উচ্ছিষ্ট অংশ, ফরমুলের খোসা গরুকে খাওয়ালে গরুর
ওজন বৃদ্ধির পায়। আসুন জেনে নি, একটি স্বাভাবিক গরুর আনুমানিক কি পরিমান
দানাদার খাদ্য প্রদান করা উচিত।
উপাদানের নাম
পরিমাণ(গ্রাম)
গমের ভুষি
৫৫০
খেসারি ভুষি
২২০
তিলের খৈল
১৪০
মাছের গুঁড়া
৯০
লবণ
১০
ঝিনুকের পাউডার
৩০
শুষ্ক খাদ্য
৯০০
মেটাবলিক শক্তি
১২
আমিষ
২০০
গম ভাঙ্গা
৯৫
চাল ভাঙ্গা
১১০
নারিকেলের খৈল
২২০
সরিষার খৈল
১৯৫
মসুর ভুষি
১১০
ধানের ভুষি
২৯০
সবুজ ঘাস
৪ কেজি
চিটাগুড়া
৪৫০
ইউরিয়া
৪৫ গ্রাম (নিয়মানুয়ায়ী)
লেখক এর মন্তব্য
গবাদিপশু মোটাতাজা করার সঠিক উপায় এবং মোটাতাজাকরণের জন্য সঠিক খাদ্য তালিকা
সম্পর্কে আমরা এই পোস্টে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। গবাদিপশুর পরিমাণ এবং
সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করে গরুর স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রেখে সেই অনুযায়ী
গরুকে নিয়মিত দানাদার খাদ্য প্রদান করা উচিত। গরু ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন
বিবেচ্য বিষয় গুলো মেনে চলা উচিত। যেকোনো সময় গরুর কোন অসাভাবিক অবস্থা বা রোগ
দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরী। আশা করি
পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ পোস্টটি টি পড়ার জন্য
ধন্যবাদ। পোস্ট সম্পর্কে যেকোনো তথ্য জানতে চাইলে কমেন্ট সেকশন আপনার
গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করুন।
Useful information