ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস কেন হয় এবং ব্ল্যাকহেডস স্থায়ীভাবে দূর করার উপায়

ব্ল্যাকহেডস হোয়াইটহেডস মূলত মুখের ব্রণজনিত সমস্যা। হোয়াইটহেডস হল মুখের এক ধরনের সাদা ব্রণ যার উপর বিভিন্ন ধূলিকণা, জীবাণুর আক্রমণের কারণে বা দীর্ঘদিন চিকিৎসা করা না হলে কালো হয়ে যায় আর তখন একে ব্ল্যাকহেডস বলা হয়। ত্বকের সঠিক যত্ন না নেয়া, দূষণ এবং ভুল খাদ্যাভ্যাস এর কারণেই মূলত ব্ল্যাকহেডস হোয়াইটহেডস হয়ে থাকে।
ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস কেন হয়

প্রিয় পাঠক ব্ল্যাকহেডস হোয়াইটহেডস কেন হয়? কোন বয়সে হয় এবং স্থায়ীভাবে দূর করার চিকিৎসা এবং ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে হলে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

হোয়াইট হেডস চিরতরে দূর করার উপায়

হোয়াইটহেডস চিরতরে দূর করার উপায় সম্পর্কে জানার আগে জানতে হবে হোয়াইটহেডস কি? হোয়াইটহেডস কমবেশি সকলেরই একটি কমন স্কিন প্রবলেম। এটি হল মুখের এক ধরনের সাদা ব্রণ। হোয়াইটহেডস মূলত দূষণ, মুখে জীবাণুর আক্রমণ, ঠিকমতো মুখ পরিষ্কার না করা এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে হয়ে থাকে। হোয়াইটহেডস মুখের সৌন্দর্য কমিয়ে দেয়। এবং হোয়াইটহেডস সঠিক সময়ে দূর না করলে এটি পরিণত হয় ব্যাকহেডসে। চিরতরে হোয়াইটহেডস দূর করার ট্রিকসঃ
  1. হাইজিন
  2. হেলদি ডায়েট
  3. হাইড্রেশন
হাইজিন: মুখ নিয়মিত দিনে অন্তত তিন থেকে চার বার ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে অথবা ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে এবং বাইরের দূষণ এড়িয়ে চলতে হবে।

হেলদি ডায়েট: অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার এবং ফাস্টফুড স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর ঠিক তেমনি স্কিনের জন্য ক্ষতিকর। ফলমূল এবং শাকসবজি স্বাস্থ্য এবং স্কিন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

হাইড্রেশন: পরিমিত পানি পান করা এবং ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করার পর মশ্চারাইজার ব্যবহার করা। বেশি বেশি পানি পান করলে আমাদের শরীর থেকে দূষিত জীবাণুগুলো বের হয়ে যায় যার কারণে ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল হয় এবং হোয়াইটহেডস কমে যায় ।

হোয়াইটহেডস দূর করার উপায়

হোয়াইটহেডস হলো মুখে সাদা ব্রণ যারা জীবাণুর আক্রমণে মৃত কোষের দ্বারা হয়ে থাকে। তৈলাক্ত ত্বকে এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। অতিরিক্ত ধুলাবালি, ময়লা এবং দূষণ থেকেও এটি হতে পারে। হোয়াইটহেডস সাধারণত গালে, থুতনিতে এবং নাকের চারপাশে হয়ে থাকে। হোয়াইটহেডস দূর করার কার্যকরী ৭ টি উপায়:

১. হোয়াইটহেডস দূর করার অন্যতম উপায় হলো মুখ পরিষ্কার রাখা।বাইরের দূষণ, ধুলাবালি, ময়লা মুখের লোমকূপ গুলো বন্ধ করে দেয়। আবার অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকেও লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে হোয়াইটহেডস হয়। তাই প্রতিবার বাইরে থেকে এসে ঠান্ডা পানি দিয়ে অথবা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। দিনে অন্তত তিন থেকে চার বার (সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা এবং রাতে) মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে ধুতে হবে।

২. মুখের হোয়াইটহেডস দূর করার জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান, বেশি বেশি শাকসবজি খাওয়া, তৈলাক্ত এবং ফাস্টফুড এড়িয়ে চললে মুখ ভেতর থেকে উজ্জ্বল হয় এবং হোয়াইটহেডস হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

৩. মুখের হোয়াইটহেডস দূর করার জন্য স্ক্রাবিং একটি কার্যকরী উপায়। স্ক্রাবিং মুখের বন্ধ লোমকূপ গুলো খুলে দেয়, মুখের তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে আনে এবং মুখের ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। স্ক্রাবিং এর জন্য আমরা ব্যবহার করতে পারি-

  • লেবু: লেবুতে থাকে সাইট্রিক এসিড যা মুখের মৃত কোষ, অতিরিক্ত তেল এবং ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। তাই স্ক্রাবিং এর ক্ষেত্রে লেবু খুবই কার্যকরী। এর জন্য লেবুর খোসা দিয়ে মুখে স্ক্রাব করে পাঁচ থেকে সাত মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • মধু ও কফি পাউডার: এক চা চামচ মধুর মধ্যে কিছুটা কফি পাউডার নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে স্ক্রাব করে
  • ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার করা যেতে পারে।
  • অলিভ অয়েল ও চিনির স্ক্রাবিং: অলিভ অয়েল এর মধ্যে এক চা চামচ চিনি নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে স্ক্রাব করে দশ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • দুধ ও চালের আটার স্ক্রাব: চালের আটা একটি কার্যকরী স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে দুধের সাথে কিছুটা চালের আটা মিশিয়ে মুখে ভালোভাবে স্ক্রাব করতে হবে এরপর মুখ শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
৪. মুখের হোয়াইটহেডস দূর করার জন্য ফেসমাস্ক ব্যবহার করা একটি কার্যকরী উপায়। এই ক্ষেত্রে ডিমের সাদা অংশের বা চারকোলের ফেসমাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।

৫. হোয়াইটহেডস থেকে বাঁচার উপায় হল সময়মতো মেকআপ রিমুভ করা এবং মশ্চারাইজার ব্যবহার করা। মেকআপ আমাদের মুখে অত্যন্ত ক্ষতিকর ইফেক্ট ফেলে। তাই সময়মতো মেকাপ রিমুভ করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে রাতের বেলা যদি মেকাপ রিমুভ না করেই ঘুমিয়ে যাওয়া হয় সকালেই মুখে হোয়াইটহেডস দেখা দিতে পারে। এবং হোয়াইটহেডস দূর করার জন্য যথাসম্ভব মেকাপ এড়িয়ে চলাই ভালো।

৬.মশ্চারাইজার ব্যবহার করা: অনেকে মনে করে তাদের তৈলাক্ত ত্বকে মশ্চারাইজার ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এটি ভুল ধারণ। বরং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলেই মুখে অতিরিক্ত তেল সৃষ্টি হয় যা হোয়াইটহেডস এর অন্যতম কারণ। তাই প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর মুখে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে মুখ হাইড্রেট থাকে এবং মুখের ড্রাইনেস দূর হয়।


৭. মুখের হোয়াইটহেডস দূর করার জন্য ভুল করেও কখনো হোয়াইটের ফাটানো যাবে না। এতে মুখে আরো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। হোয়াইটহেডস ব্ল্যাকহেডসে পরিণত হয়।

নাকের হোয়াইটহেডস দূর করার উপায়

তৈলাক্ত ত্বকে বেশি হোয়াইটহেডস দেখা দেয়। বিশেষ করে নাকের চারপাশে এবং থুতনিতে। তবে ভুল করেও হোয়াইটহেডস ফাটানো ঠিক নয়। এক্ষেত্রে নাকের হোয়াইটহেডস দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক -

১. অ্যালোভেরা জেল: নাকের হোয়াইটহেডস দূর করার জন্য এলোভেরা জেল খুবই কার্যকরী। এজন্য প্রতিদিন দুবেলা এলোভেরা জেল নাকের চারপাশে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।

২. মধু: মধুতে রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল, এন্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা মুখের হোয়াইটহেডস দূর করে। মধুর সাথে কিছুটা কাঁচা দুধ মিশিয়ে নাকের চারপাশে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে হোয়াইটহেডস দূর হয়।

৩. লেবুর রস: হোয়াইটহেডস মূলত তৈলাক্ত ত্বকে বেশি হয়ে থাকে। মুখের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য লেবু অত্যন্ত কার্যকরী। লেবুতে থাকে সাইট্রিক এসিড যা মুখের ময়লা দূর করতে এবং এন্টি মাইক্রোবিয়াল হিসেবে কাজ করে।

এক্ষেত্রে অলিভ অয়েল এর সাথে কিছুটা লেবুর রস এবং চিনি মিশিয়ে নাকের চারপাশে ভালোভাবে লাগিয়ে স্ক্রাব করে ১০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

৪. নাকের হোয়াইট হেডস দূর করার জন্য ঘরোয়া উপায়ে তৈরি ফেস মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন ডিমের সাদা অংশ দিয়ে তৈরি ফেস মাস্ক নাকের হোয়াইট হেডস এর ওপর লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়ার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

হোয়াইট হেডস দূর করার মাস্ক

ব্রণের মতই হোয়াইট হেডস একটি বিরক্তিকর অবস্থা। হোয়াট হেডস দূর করার জন্য কিছু ফেস মাস্ক কার্যকরী ভূমিকা রাখে।


১. ডিমের সাদা অংশের তৈরি ফেস মাস্ক: ব্ল্যাক হেডস কিংবা হোয়াইট হেডস এর জন্য ডিমের সাদা অংশের তৈরি ফেস মাস্ক খুবই কার্যকরী। এর জন্য ডিমের সাদা অংশ একটি বাটিতে ভালোভাবে ফাটিয়ে নিতে হবে।

এবার মুখ ভালোভাবে কোন ক্লিনজার দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। মুখ ধুয়ে শুকিয়ে নেয়ার পর হোয়াইট হেডস এর ওপর পাতলা করে মাস্কটি লাগাতে হবে। এরপর নরম টিস্যু পেপার দিয়ে মাস্ক লাগানো অংশগুলো ঢেকে দিতে হবে।

পুনরায় টিস্যু পেপারের উপর মাস্ক লাগিয়ে আবারো আরেকটি টিস্যু পেপার দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এভাবে কয়েক স্তরে ফেইস মাস্কটি লাগাতে হবে। শুকিয়ে যাওয়ার পর ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

২. চারকোলের মাস্ক: মুখের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব, হোয়াইট হেডস এবং ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সাহায্য করে চারকোলের মাস্ক। এজন্য আগে মুখ ভালো করে কোন একটি ক্লিনজার দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর চারকোলের মাড মাস্ক ভালোভাবে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়ার পর দশ থেকে পনেরো মিনিট পরে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

৩. পিল অফ মাস্ক: পিল অফ মাস্ক হোয়াইট হেডসের জন্য বেশ কার্যকর। এই মাস্ক তৈরি করার জন্য দুই থেকে তিন টেবিল চামচ জেলাটির নিয়ে এর সাথে কাঁচা দুধ মিশাতে হবে। এরপর মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইট হেডস এর ওপর মাস্কটি লাগাতে হবে এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর তুলে ফেলতে হবে।

৪. বেকিং সোডার মাস্ক : বেকিং সোডা মাস্ক তৈরি করতে দুই থেকে তিন চামচ বেকিং সোডা নিয়ে এর মধ্যে দুই তিন ফোঁটা পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর হোয়াইটহেডসের ওপর মিশ্রণটি ভালোভাবে লাগাতে হবে এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে যাওয়ার পর উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

হোয়াইট হেডস কেন হয়

হোয়াইট হেডস হলো এক ধরনের সাদা ব্রণ। ত্বক থেকে নিঃসৃত তেল বয়স ধরে রাখার জন্য এবং ত্বক মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক হোয়াইট হেডস এর মূল কারণ। ত্বক থেকে অধিক হারে তেল নিঃসৃত হওয়ার কারণে এবং ত্বকে ধূলিকণা জমার কারণে যখন লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায় তখন সেখানে হোয়াইট হেডস তৈরি হয়।

সাধারণত ময়লা থেকে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের কারণে এরকম হয়ে থাকে। তৈলাক্ত এবং ময়লাযুক্ত ত্বক হোয়াইটহেডসের প্রধান কারণ হলেও আরো বেশকিছু কারণে হোয়াইট হেডস হয়ে থাকে। এ কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে -

  • বয়সন্ধিকাল : বয়ঃসন্ধিকালে ত্বকের যেকোনো সমস্যা হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। যেমন ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস।হরমোন জনিত কারণে এরকমটা হয়ে থাকে। কারণ বয়সন্ধিকালে দেহে সকল ধরনের হরমোন বেশি নিঃসৃত হয়।
  • বংশগত কারণ : অনেক সময় বংশগত কারণেও হোয়াইট হেডস, ব্ল্যাকহেডস, ব্রণ জনিত সমস্যা গুলো হয়ে থাকে। পরিবারের অন্য কারোর বা বাবা-মায়ের যদি ত্বকের এ ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে পরবর্তী বংশধরদেরও এ ধরনের সমস্যা দেখা যায়। এটি সাধারণত জিনগত কারণে হয়ে থাকে।
  • অপরিচ্ছন্নতা :হোয়াইট হেটস এর অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে অপরিচ্ছন্নতা। বাইরে থেকে এসে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার না করা, অতিরিক্ত মেকআপ ব্যবহার করা, রাতে ঘুমানোর আগে মুখ না ধোয়ার কারণে রাতারাতি মুখে হোয়াইটের দেখা দেয়।
  • প্রসাধনী সামগ্রী :অতিরিক্ত মেকআপ বা কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করা, মেয়াদ উত্তীর্ণ মেকআপ ব্যবহার করা এবং সঠিকভাবে মেকাপ রিমুভ না করার জন্য মুখের হোয়াইটহেডস দেখা দেয়।
  • তৈলাক্ত খাবার : অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার যেমন ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড, জাঙ্ক ফুড খাওয়া এবং কম পরিমাণে পানি পান করার জন্য মুখে ব্রণ, হোয়াইট হেডস, ব্ল্যাক হেডস হয়ে থাকে।

হোয়াইট হেডস দূর করার ফেসওয়াস

হোয়াইট হেডস দূর করার জন্য বাজারে অনেক রকম ফেসওয়াস পাওয়া যায়। হোয়াইটহেডস দূর করতে পারে এমন কিছু কার্যকর ফেসওয়াস হলো:

  • হিমালয়া নিম ফেসওয়াস: এই ফেসওয়াশের প্রধান উপাদান হচ্ছে নিম যা মুখের অতিরিক্ত তেল, ময়লা, ব্রণ এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন এর জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। এটি মুখের ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইট হেডস দূর করতেও সহায়তা করে।
  • পন্ডস হোয়াইট বিউটি ফেস ওয়াশ : পন্ডস হোয়াইট বিউটি স্পটলেস ফেয়ারনেস ফেসওয়াশ মুখে মেলানিনের স্থানান্তর বন্ধ করে মুখ ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে এবং এতে রয়েছে ভিটামিন বি৩ যা মুখের প্রদাহ জনিত সমস্যা যেমন ব্ল্যাকহেডস হোয়াইটহেডস দূর করতে সহায়তা করে।
  • ক্লিন এন্ড ক্লিয়ার ফেসওয়াস : অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকে হোয়াইট হেডস এর বেশি হয়। আর অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ক্লিন এন্ড ক্লিয়ার ফেসওয়াস খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

হোয়াইট হেডস দূর করার ঔষধ

হোয়াইট হেডস দূর করার জন্য বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের সিরাম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যেমন দ্য অর্ডিনারি সিরাম। হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এর মধ্যে রয়েছে হুইজল ব্রণ ক্লিয়ার ট্যাবলেট যা ব্ল্যাকহেডস হোয়াইটহেডস এবং ব্রণজনিত সমস্যায় ভালো কাজে দেয়।

এছাড়াও হোয়াইট হেডস দূর করার জন্য খুবই কার্যকর একটি ক্রিম হচ্ছে ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কোম্পানির ক্রিম বেনজাক। বেনজোইল পার অক্সাইড দিয়ে তৈরি এই ক্রিমটি ডাক্তাররা হোয়াইট হেডস জনিত সমস্যার জন্য দিয়ে থাকে।

হোয়াইট হেডস দূর করার ক্রিম

হোয়াইট হেডস দূর করার জন্য বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের ক্রিম পাওয়া যায়। কিন্তু সব ক্ষেত্রে সেই ক্রিমগুলো খুব একটা কার্যকর হয় না। আবার অনেক সময় এর বিরূপ প্রভাবও দেখা দেয়।

হোয়াইটহেডস ব্ল্যাকহেডস এবং মুখের ব্রণ জনিত সমস্যার জন্য বাজারের পণ্যগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। এ ধরনের সমস্যার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্রিম ব্যবহার করাই উত্তম।

হোয়াইট হেডস এর জন্য ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কোম্পানির বেনজাল ক্রিমের পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা। বেনজোইল পারঅক্সাইড দিয়ে তৈরি এই বেনজাল ক্রিমটি হোয়াইট হেডস দূর করার জন্য ভালো কাজে আসে।

হোয়াইট হেডস দূর করার ঘরোয়া উপায়

হোয়াইট হেডস একটি নাছোড়বাধা সমস্যা। একবার হলে আর সহজে ভালো হতে চায় না। মুখে ময়লা, জীবাণুর আক্রমণ, বা অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে হোয়াইটহেডস দেখা দেয়। অপর্যাপ্ত ঘুম, দুশ্চিন্তা, ধূমপান ইত্যাদি কারণে হোয়াইট হেডস দেখা দেয়।

হোয়াইট হেডস স্থায়ীভাবে দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। ঘরোয়া উপায় গুলো সাধারণত হয়ে থাকে সহজ, কম খরচ, এবং এর কোন ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না। হোয়াইট হেডস দূর করার জন্য যে ঘরোয়া উপায় গুলো আমরা অবলম্বন করতে পারি। মুখ নিয়মিত ভালোভাবে পরিষ্কার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারি। যেমন :

১. কয়েক ফোটা পাতি লেবুর রসের সাথে কিছুটা মধু মিশিয়ে মুখে স্ক্রাব করলে মুখ ভেতর থেকে পরিষ্কার হয়। লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড এবং মধুতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী মুখ ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে এবং জীবাণু মুক্ত করতে সাহায্য করে ।

২. মুখের হোয়াইট হেডস এবং ব্রণের দাগ দূর করার জন্য হলুদ একটি খুবই কার্যকরী ঘরোয়া উপায়। এর জন্য কিছুটা হলুদ গুঁড়া নিয়ে তার সাথে ২/৩ চামচ মধু মিশিয়ে হোয়াইট হেডস এর ওপর লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।

৩. হোয়াইট হেডস এবং ত্বকের যে কোন সমস্যা স্থায়ীভাবে দূর করার জন্য নিম পাতার রস একটি ভেষজ উপাদান। এর জন্য ১৫ থেকে ২০ টি নিম পাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে পানিতে কিছুক্ষণ ফোটানোর পর ভালোভাবে ঠান্ডা করে নিয়ে সে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

৪. মুখের হোয়াইট হেডস স্থায়ীভাবে দূর করার জন্য ডিমের সাদা অংশের তৈরি ফেসমাস্ক খুবই কার্যকরী। এর জন্য ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে ফাটিয়ে নিয়ে টিস্যু পেপার দিয়ে কয়েকটি স্তরে হোয়াইট হেডসের উপর লাগাতে হবে এবং শুকিয়ে যাওয়ার পর মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

৫. বাষ্পগ্রহণ হোয়াইটহেডস দূর করার জন্য একটি কার্যকর ঘরোয়া পায়। ১০ মিনিটের মতো বাষ্প বা ভাপ নেয়ার পর একটি নরম তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ফেলতে হবে। এতে মুখের হোয়াইট হেডস এবং ব্রণ জনিত সমস্যার সমাধান হয়।

৬. হোয়াইট হেডস এবং মুখের দাগ দূর করার জন্য গোলাপ জলের সাথে চন্দন গুড়া মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে হবে। হোয়াইট হেডস দূর করার জন্য এই সকল ঘরোয়া উপায় এবং প্রাকৃতিক উপায় গুলো অবলম্বন করলে মুখের কোন ক্ষতি ছাড়াই মুখের হোয়াইট হেডস এবং দাগ দূর করা সম্ভব।

নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক

ব্ল্যাক হেডস দূর করার জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাস্ক পাওয়া গেলেও ঘরোয়া উপায়ে তৈরি মাস্ক ব্যবহার করা বেশি কার্যকর এবং এতে মুখে কোন ক্ষতিকর প্রভাবও পড়ে না। নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার জন্য ঘরোয়া উপায়ে যে মাস্কগুলো আমরা তৈরি করতে পারি-

ডিম দিয়ে তৈরি মাস্ক: ডিম দিয়ে মাস্ক তৈরি করার জন্য প্রথমে একটি বাটিতে শুধুমাত্র ডিমের সাদা অংশটি নিয়ে নাকে ব্ল্যাকহেডস এর ওপর লাগাতে হবে।এর ওপর টিস্যু পেপার রেখে আবারো মাস্কটি লাগাতে হবে। এভাবে কয়েকটি স্তরে মাস্কটি লাগিয়ে শুকানোর পর তা তুলে ফেলতে হবে। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিডপয়েন্ট ওয়েবের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url